বৃষ্টির জন্য দরকার মৌসুমি বায়ু,কবে আসতে পারে জানাল আবহাওয়া দপ্তর
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, গত মে মাসে দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪৪ ভাগ কম বৃষ্টি হয়েছে। চলতি জুন মাসেও কম বৃষ্টি হতে পারে। এরই মধ্যে প্রচণ্ড গরম পড়েছে। আজ শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল দিনাজপুরে, ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই তুলনায় খানিকটা তাপ কমলেও গরমের অনুভূতি একটুও কমেনি।
এ সময়ে বৃষ্টি বড় কাঙ্ক্ষিত। কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, এখন বৃষ্টি বয়ে আনবে মৌসুমি বায়ু। তা আসতে একটু দেরি হচ্ছে। মৌসুমি বায়ু সৃষ্টি হওয়ার পরপরই বৃষ্টি হতে পারে। প্রশ্ন হলো তা আসবে কবে?
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক গত ৩০ বছরের জলবায়ুগত পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি জানান, দেশে মৌসুমি বায়ুর প্রবেশ ঘটে মূলত টেকনাফ অঞ্চল দিয়ে। ৩০ বছরের গড় হিসাবে ৩১ মে টেকনাফ, ১ জুন কক্সবাজার, ২ জুন চট্টগ্রাম ও ৪ থেকে ৫ জুন দেশের মধ্যাঞ্চলে মৌসুমি প্রবেশ করে। এই সময়ের কিছু হেরফের হয় বটে। এবারও হয়েছে।
নাজমুল হক বলেন, টেকনাফ অঞ্চলে মৌসুমি বায়ুর প্রবেশ ঘটতে আরও তিন দিন দেরি হতে পারে। এরপর দেশের অন্যত্র তা প্রবেশ করবে। তারপরই বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রতি মাসের শুরুতে এক মাস মেয়াদি পূর্বাভাস দেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সেই পূর্বাভাস তুলে ধরে মে মাসের আবহাওয়া পরিস্থিতিও জানিয়েছে তারা। সেখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মে মাসে গড় বৃষ্টি হয় ২৮৪ মিলিমিটার। আর মে মাসে বৃষ্টি হয়েছিল ১৫৯ মিলিমিটার। দেশের আট বিভাগের মধ্যে এ সময় সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয় সিলেটে। এ অঞ্চলে মে মাসে গড় বৃষ্টির পরিমাণ ৫১০ মিলিমিটার। কিন্তু গত মাসে হয়েছে ২৫৭ মিলিমিটার। মে মাসে সাধারণত ২৪ দিন সিলেটে বৃষ্টি হয়। এবার হয়েছে ১৬ দিন। সবচেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে রংপুর বিভাগে। এ বিভাগে প্রায় ৫১ ভাগ বৃষ্টি কম হয়েছে।
গত মে মাসের শুরুটাই হয়েছিল প্রচণ্ড গরমের মধ্য দিয়ে। সপ্তাহ ধরেই চলে সেই গরম। এর মধ্যে বঙ্গোপসাগরে দেখা দেয় লঘুচাপ। সেটি নিম্নচাপ থেকে ক্রমে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখায় পরিণত হয়। এ ঘূর্ণিঝড় ১৪ মে কক্সবাজার উপকূল পার হয়। মোখার প্রভাবে কক্সবাজার ও এর আশপাশের এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়। তবে সারা দেশে বৃষ্টিপাত হয় এর দুই দিন পর থেকে। কয়েক দিন বৃষ্টির পর আবার শুরু হয় প্রচণ্ড গরম। মে মাসের শেষ থেকে জুনের শুরুতে তা অব্যাহত রয়েছে।